জনপ্রিয়তা না থাকলে মনোনয়ন দেয়া হবে না মন্ত্রী-এমপিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও দলের এমপিদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ। যেসব মন্ত্রী এমপির এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা নেই, জনপ্রিয়তা নেই, যারা তৃণমূল নেতাকর্মীদের দ্বিধা-বিভক্ত করেছেন, ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে এলাকার জনগণের অভিযোগ রয়েছে তারা মনোনয়ন পাবেন না। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনির্ধারিত আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সংসদীয় দলের বৈঠকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপিদের প্রতি এমন সতর্ক বার্তা দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির ভীষন-২০৩০ ঘোষণা প্রসঙ্গে আলোচনাকালে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগেরটা অনুসরণ করে তারা নিজেদের ভিশন ঘোষণা করেছে। এ সময় অন্যান্য মন্ত্রীরাও তাঁর সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মন্ত্রী জানান, মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নেবে। সবদিক দিয়ে হিসাব-নিকাশ করে এই নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। মন্ত্রী ও এমপিদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, দলকে তৃণমূল পর্যায়ে আরও সুসংগঠিত করে তুলতে হবে। কোনো কোনো জায়গায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে এমপি-মন্ত্রীদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এ দূরত্ব দ্রæত ঘোঁচাতে হবে। তা না হলে আপনারা (এমপি-মন্ত্রী) ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বর্তমানে এমপি আছেন, তারা নিশ্চিত মনোনয়ন পাবেন- এমন ধারণা নিয়ে থাকলে ভুল করবেন। কারণ আগামী নির্বাচন ২০১৪ সালের মতো হবে না। যারা এলাকার জনগণের জন্য কাজ করেছেন জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন তাদেরই মনোনয়ন দেয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দলের অনেক নতুন এমপি আছেন। যারা ভোট কি তা জানেন না। এলাকায় যান, জনগণের পাশে দাঁড়ান। তাদের কী অসুবিধা আছে তা জানুন। তাদের সমস্যার সমাধান করুন। নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। কী করলে ভোটাররা আকৃষ্ট হন, সে কাজ করতে হবে। আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী জরিপের কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, জরিপের ফলাফলে যারা ভালো করবেন, তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে। এসময় প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড জনগণের সামনে তুলে ধরতে এমপি-মন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া মন্ত্রিসভায় সেনানিবাস আইন ২০১৬ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন, বাংলাদেশ ও সান ম্যারিনোর মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে এগ্রিমেন্ট বিটুইন দ্য রিপাবলিক অব সানমেরিনো অ্যান্ড পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ অন দ্য স্ট্যাবলিশমেন্ট অব ডিপ্লোমেটিক রিলেশনস এর খসড়ার সমর্থন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া চার মন্ত্রীর বিদেশ সফর বিষয়ে মন্ত্রিসভায় অবহিত করা হয়েছে।
বিচারকদের চাকরিবিধি : বার বার সময় আবেদন করায় বিরক্ত আপিল বিভাগ
অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট না করে সরকার আরও চার সপ্তাহের সময় আবেদন করায় বিরক্তি প্রকাশ করেছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে গেজেট প্রকাশে সরকারকে আরও দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আদালত। গতকাল রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ সময় মঞ্জুর করেন। সর্বশেষ গত ৮ মে শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রণয়নে সরকারকে এক সপ্তাহের সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে গেজেট প্রকাশ না করে ফের সময় আবেদন করা হয়। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত গেজেট প্রণয়নে ত্রয়োদশ বারের মতো সময় নিল সরকার।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর